দানবদের কোন ছাড় নয়
জেলা প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম
যারা অকারণে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে তাদের দানব আখ্যায়িত করে এদের কোন ছাড় দেওয়া হবেনা বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপি-জামায়াত জোটের কর্মকাণ্ডকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, তারা কি মানুষ, না দানব? আমরা এই দানবদের কোনো ছাড় দেব না।
দানবের কাছে মানুষ হারতে পারে না। আমরা এই দানবদের প্রতিহত করে দেশের শান্তি ফিরিয়ে আনব।”
বৃহস্পতিবার সকালে কালিয়াকৈরের সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৫ তম জাতীয় সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরতাল-অবরোধে এ পর্যন্ত ১০০-এর কাছাকাছি মানুষ মারা গেছেন। বহু মানুষ পেট্রলবোমায় পুড়ে দগ্ধ হয়েছেন। তারা অকারণে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। যারা পুড়ছেন, যারা মারা যাচ্ছেন, তারা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের জীবনের মূল্য বিএনপির কাছে নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০ দল আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। “এটা কি রাজনীতি? বিএনপি-জামায়াত জোট যা করছে, তা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই বিএনপি-জামায়াত দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠেছে। পেট্রোল বোমা মেরে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে।”
“তারা ধর্মের কথা বলে, কিন্তু তারা বিশ্ব ইজতেমা, মহানবীর জন্ম-ওফাত দিনেও তারা হরতাল-অবরোধ দিয়েছে। ১৫ লাখ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এরা দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়।”
সরকার প্রধান বলেন, কোনো বাধা ও ষড়যন্ত্র দেশকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা সরকারের দায়িত্ব। আনসার বাহিনীর সদস্যরা অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছে। তারা মহাসড়কে মানুষের জানমাল রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছে। নারীর ক্ষমতায়নেও তারা কাজ করেছে।
তিনি আরো বলেন, সাত বছর পর সৌদি আরবে সামান্য খরচে দেশের মানুষ যাচ্ছে। বিদেশে ৮৫ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছে। অর্থনৈতিকভাবে দেশ এগিয়ে গেছে। দেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। জীবন যাত্রার মান উন্নত হয়েছে। আগামী ৪ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ দারিদ্রতা কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি ঠিক সেই সময় বিএনপি মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। সহিংসমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের ছেলেমেয়েকে শিক্ষিত করতে চাই। বিনা মূল্যে তাদের বই দিচ্ছি। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে ছেলেমেয়েরা এসএসসি পরীক্ষা ঠিক মতো দিতে পারছে না। এ সময়ে সহিংস কর্মকাণ্ড দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উদ্দেশে প্রধানমন্তী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে আনসার-ভিডিপি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমিতে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় সমাবেশের প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সালাম গ্রহণ করেন তিনি। সামবেশে দক্ষতা এবং কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৯৭ জন আনসার-ভিডিপি সদস্যকে পুরস্কৃত করেন প্রদানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আনসার ভিডিপি এলাকা বর্নিলসাজে সাজানো হয় এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রতিক্ষণ /এডি/হামীদ